ব্যায়াম করুন, উপকারিতা পাবেন Health science |
নিয়মিত ব্যায়াম এবং সাথে ভালো খাদ্য ডায়েট মেনে চললে আপনার জীবন হয়তো পরিবর্তন হয়ে যাবে। জীবন পরিবর্তন হওয়া বলতে আপনি সবসময়ই অনেক energy feel বা কাজ করার জন্য শক্তি অনুভব করবেন। যদি ওজন আপনার বেশি থাকে তাহলে সেটা কমে যাবে। এবং ওজন কখনো অর্জন(gain) হবেও না।
exercise করা শুরু করতে যা জরুরি?(Why you need to do exercise)
নিয়মিত exercise করা শুরুর পূর্বে প্রথমে নিজেকে গুছিয়ে নেয়া জরুরি। কেন আমি exercise করবো এটা প্রথমে নিজেকে ভালোভাবে বুঝাতে হবে যা self motivation হিসেবে কাজ করবে। আমাদের অনেক কাজ করে যা জানি আমাদের করা উচিত নয় তাও আমরা করে ফেলি।
যেমন, ধরুন আপনি ডায়েটে আছেন এবং জানেন যে জ্বালা পোড়া খাওয়া ঠিক নয়। তাও আমরা জ্বালা পোড়া খেয়েই থাকি।
তেমনি দু-একদিন exercise করার পর আমাদের মনে হবে আর exercise করে লাভ কি, exercise করার ইচ্ছাই অনেকটা চলে যাবে।
তাই প্রথমে নিজের goal set করা জরুরি। exercise বা পরিশ্রম করার গুরুত্ব বুঝে তারপর জিমে যাওয়া যেতে পারে।
নিয়মিত পরিশ্রম বা exercise করার গুরুত্ব?(Importance of Exercise)
নিয়মিত exercise করলে productivity প্রায় ৭২% বেড়ে যায়। অর্থাৎ কোনো কাজ পূর্বের তুলনায় আপনি আরো দ্রুত করতে পারবেন।
পরিশ্রম করার পর প্রথমে আপনার সার্বিকভাবে অনেক tired মনে হবে, তবে পরবর্তীতে আপনি কাজ করার জন্য যথেষ্ট energy পাবেন। এবং দীর্ঘদিন exercise practice করলে আপনার দৈহিক ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। আপনি ফিট থাকবেন এবং কাজ করতে পারবেন।
Exercise করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নিজেকে সকল রোগবালাই থেকে দূরে রেখে নিজেকে ফিট রাখা। এজন্য নিয়মিত ব্যায়াম করে থাকা হয়। নিয়মিত ব্যায়াম ওজন কমাতে সাহায্য করে। যারা ওজন কমাতে চায় তাদের ডায়েট ঠিক রাখার সাথে সাথে অবশ্যই ব্যায়াম বা exercise করতে হয়। ব্যায়াম করার কারণে দেহে সঞ্চিত ফ্যাট বা চর্বি ব্যবহার করে যায়।
তাই ওজন কমে।
এছাড়াও ভালো শ্বাস-প্রশ্বাস, হার্ট সুস্থতা, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ঘুম ভালো হওয়া, ডায়াবেটিস প্রতিরোধ সহ আরো হাজারো স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে ব্যায়াম করার।
নিয়মিত ব্যায়াম বা exercise ঘুম ভালো রাখে?(How regular exercise imprroves sleep)
পরিমিত পরিমাণ ব্যায়াম করলে দেহের ভেতরের ঘড়ি এবং বাইরের প্রাকৃতিক আলোর যে ঘড়ি রয়েছে সেটার ছন্দময়তা বজায় রাখে। যার কারণে সঠিক সময়ে ঘুম আসে।
নিয়মিত ব্যায়াম শরীরে শক্তি ব্যয় করায়, অক্সিজেন চাহিদা বাড়িয়ে দেয়, শরীরে exercise করার কারণে প্রাথমিকভাব যে ক্ষয় হয় তা পূরণ করার জন্য ব্রেইন নিজ থেকেই বেশি ঘুমিয়ে নিবে। তাই সহজে ঘুম আসে। ঘুমোতে যাওয়ার পর ঘুম আসতে যে সময় লাগে তাকে বলে sleep latency। ব্যায়াম এই sleep latency এর পরিমাণ কমিয়ে দেয়। অর্থায় একজন ব্যক্তির খুবই দ্রুতই ঘুম আসবে।
এছাড়াও এন্ডোরপিন নামক হরমোম ব্যায়াম করার সাথে সাথে নি:সৃত হয়। এন্ডোরপিন স্ট্রেস, দুশ্চিন্তা কমিয়ে দেয়। দুশ্চিতা থাকলে তো মানুঅ আর ঘুম আসবে না। তাই দেখা যায়, ব্যায়াম দুশ্চিন্তার পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে ঘুম ভালো করে।
exercise energy level ঠিক রাখে, বিভিন্ন ঘুমের রোগ দূরীকরণে ব্যায়াম করা হয়।
তবে কখন exercise করবেন সেটার ওপর নির্ভর করে আপনার কোয়ালিটি স্লিপ। ঘুমের আগ মুহূর্তে অতিরিক্ত ব্যায়াম ঘুম আসার সময়কে বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই হঠাৎ হঠাৎ অতিরিক্ত ব্যায়াম না করে নিয়মিত ব্যায়াম করা জরুরি।
exercise কিভাবে হার্ট সুস্থ রাখে?(Exercise keeps a good heart health)
নিয়মিত ব্যায়াম করলে হার্টের পেশিগুলো সবল হয়(strength) বাড়ে। ফলস্বরূপ রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়।
এছাড়াও HDL(High density lipoprotein) বৃদ্ধি পায়। এটি ভালো কোলেস্টেরল যা হৃদঝুকি কমিয়ে দেয়। আবার LDL বা Low density Lippoprotein এর পরিমাণ কমে যায়। ফলে আবারো হার্টে যে রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তা কমে যায়।
ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত ব্যায়াম করার কথা বলা হয়, কারণ exercise করলে ইনসুলিনের প্রতি দেহ সেনসেটিভ হয়ে যায়। ফলস্বরূপ ইনসুলিন রক্তের অতিরিক্ত গ্লুকোজ কোষে প্রবেশ করিয়ে ব্লাড গ্লুকোজ ঠিক রাখে।
এছাড়াও অতিরিক্ত ক্যালরি বার্ন হয় এবং স্থূলতা দূর হয়। অতিরিক্ত রক্তচাপ যাদের আছে তাদের ক্ষেত্রে সেটাও নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়।
অপরদিকে কার্ডিয়াক আউটপুট বাড়ানো, প্রদাহ কমানো, স্ট্রেস হরমোন নি:সৃত করে স্ট্রেস কমাতে নিয়মিত exercise এর রয়েছে ব্যাপক ভূমিকা যা সার্বিকভাবে হার্টকে সুস্থ রাখে।
যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য ব্যায়ামের কার্যকারিতা?(Exercise in losing weight)
যারা ডায়েট ঠিক করতে চান তাদের জন্য অবশ্যই নির্দিষ্ট পরিসরে ব্যায়াম করা উচিত। exercise ছাড়া ওজন কমানো অসম্ভবই বলা হয়। অনেকেই জিমে গিয়ে থাকেন exercise করার জন্য। তবে দেখা যায় অধিকাংশই জিমে গিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই হাল ছেড়ে দেয়। কারণ সুফল পেতে কিছুদিন সময় লাগে। এতো ধৈর্য সবার থাকে না। তবে exercise করার গুরুত্ব বুঝে এবং ওজন কমানো যে জরুরি সেটার গুরুত্ব বুঝে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
ব্যায়ামের মাধ্যমে যে দেহের ভেতর অতিরিক্ত চর্বি থাকে সেগুলো বার্ন হয়ে যায়। তাই ওজন কমে যায়। তবে অবশ্যই ব্যায়ামের সাথে সাথে ডায়েট ঠিক রাখতে হবে। আসলে আপনার ওজন বাড়বে নাকি কমবে সেটা অনেকটা ব্রেইন ঠিক করে।
আপনি যদি পুষ্টিকর খাবার খান তাহলে ব্রেইন বুঝতে পারছে যে দেহে যথেষ্ট পরিমাণ পুষ্ট আছে, তাই মেটাবলিসম বাড়িয়ে দিবে ব্রেইন। বিপাক বা মেটাবলিজম বেড়ে গেলে দেহের অতিরিক্ত চর্বিগুলো ভাঙ্গতে থাকবে।
অন্যদিকে আপনি যদি junk food খান তাহলে ব্রেইন সিগন্যাল পাচ্ছে দেহে পুষ্টি কম, তাই ব্রেইন মেটাবলিজম কমিয়ে দিবে। ফলে ফ্যাট বার্ন হবে না। উল্টো অতিরিক্ত junk খাবারগুলো দেহে সঞ্চিত হবে ফলস্বরূপ ওজন কমানো যাবে না।
তাই ওজন কমাতে হলে পরিমিত ব্যায়ামের সাথে সাথে ডায়েটও ঠিক রাখতে হবে।
ব্যায়ামের পাশাপাশি খাবার হওয়া উচিত স্বাস্থ্যকর Health science |
ব্যায়ামের জন্য কি জিমে যাওয়া উচিত?(Shoulf we go to gym for exercise)
নিয়মিত পরিশ্রমের জন্য gymnasium এ যাওয়া একটি ভালো উপায় হতে পারে। নিয়মিত জিমে গিয়ে পরিশ্রম করলে দেহের যে সার্বিক পরিবর্তন সাধন হবে তা ভালো ফল বয়ে আনতে পারে। তবে অনেকেই আছে body build করার জন্য জিমে যায় বিপরীত লিঙ্গকে আকর্ষিত করার জন্য। তবে এরকম উদ্দেশ্য থাকলে বেশিদূর এগোনো যায় না। কেননা তখন একবার শরীর ফিট হয়ে গেলে বিপরীত লিঙ্গ আকর্ষিত হওয়ার পর পরবর্তীতে আর exercise করার ইচ্ছা থাকবে না।
বরং উদ্দেশ্য হওয়ার উচিত exercise করবো নিজের শরীরকে ফিট রাখার জন্য। body building করা সবার উদ্দেশ্য থাকা উচিত নয়, বরং নিজেকে সুস্থ রাখার উদ্দেশ্য নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত।
তবে অবশ্যই একজন nutritionist বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ মোতাবেক চলা উচিত।
জিমে গিয়ে স্টেরয়েড গ্রহণ?(Steroid uptake in gym)
বাংলাদেশে জিমে গিয়ে শরীর বা body buidup করার জন্য বাইরে থেকে স্টেরয়েড বা টেস্টোস্টেরন নিয়ে থাকা হয়। এটা পরিমিত পরিমাণে নিলে তো কোনো সমস্যা হয় না। তবে বেশি নিয়ে ফেললে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা side effect দেখা যেতে পারে। বাইরে থেকে টেস্টোস্টেরন নিলে শরীরের ভেতরে যেই টেস্টোস্টেরন( গুরুত্বপূর্ণ sex hormone) তৈরি হয় তার উৎপাদন কমে যাবে। ফলস্বরূপ অ্যান্ড্রোজেন বেড়ে যাবে। ফলে gynecomastia দেখা যেতে পারে। gynecomastia হচ্ছে পুরুষদের ব্রেষ্ট অনেকটা নারীদের মতো হয়ে যাওয়া। তাই এ বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে।
বাসায় কিসব অনুশীলন করা যেতে পারে? বাসায় ব্যায়াম করার নিয়ম(exercise at home)
অনেকের পক্ষে জিমে যাওয়া সম্ভব হয় না বা অনেকেই জিমে যেতে পছন্দ করে না। তাদের ক্ষেত্রে বাসায়ও নিয়মিত ব্যায়াম করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম বাসায় একটি নির্দিষ্ট মোটামুটি বড় স্থান জোগাড় বা ঠিক করতে হবে। তারপর ব্যায়ামের জন্য কিছু যন্ত্রপাতি বা equipment যদি জোগাড় করা যায় তাহলে ভালো।
না পারা গেলে পুশ আপ করা যেতে পারে। you-tube a কিভাবে squat,lung,push-up ইত্যাদি লিখে search দিয়ে সে অনুযায়ী শিখে ফেললে ভালো হয়। তাহলে বাসায় ব্যায়াম বা exercise করার সঠিক নিয়ম খুজে পাওয়া যাবে। সঠিক পদ্ধতিও খুজে পাবেন।
এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে একটি রুটিন তৈরি করা এবং মোটিভেটেড থাকা। নিয়মিত একই সময়ে ব্যায়াম করা, এতে জীবন পরিবর্তন হয়ে যাবে। কেননা, নিজের মধ্যে এতো energy পাবেন তা বলাই বাহুল্য।
আবার অনলাইনে জিম করার জন্য ট্রেইনার পাওয়া যায়, অনেকের ক্ষেত্রে এটাও উপকারী হতে পারে।
ক্ষেত্রবিশেষ একটা কমিউনিটি তৈরি করার প্রয়াস থাকা যেতে পারে। একটি বিল্ডিংএ বসবাসরত সবাই যদি একইসাথে নিয়মিত পরিশ্রম বা ব্যায়াম করার সিদ্ধান্ত নেয় নিজ বাসায় তাহলে ব্যাপারটা আরো সহজ হয়।
ঘুমানোর আগে ব্যায়াম করা কি উচিত?(Should we do exercise before sleep)
exercise বা ব্যায়াম আপনি করবেন যাতে যেকোনো কাজে আমি শক্তি বা energy অনুভব করেন এবং আপনার productivity বেড়ে যায়। বা সংক্ষেপে কাজ করার দক্ষতা বেড়ে যায়। ব্যায়ামের অন্যতম আরেকটি উপকারিতা হচ্ছে ব্যায়াম করলে ভালো ঘুম হয়।
এখন ঘুমের আগে যদি ব্যায়াম করা হয় তাহলে তখন পরিশ্রমের কারণে ক্লান্ত অনুভব করবেন। ফলস্বরূপ ঘুমে বিঘ্ন ঘটার সম্ভাবনা থাকে।
তাই ঘুমানোর আগ মুহূর্তে সাধারণত ব্যায়ামের অভ্যাস করা ঠিক নয়। চেষ্টা করবেন অন্য কোনো সময় ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তোলা।
ব্যায়ামের পর কি খাওয়া উচিত? ব্যায়াম ও খাবার দাবার?(Foods after having exercise)
exercise এর পর শরীরে মাংসপেশি থেকে প্রোটিন ব্যয় হয়। তাই পরিশ্রমের পর প্রোটিনের ক্ষয়পূরণের জন্য ব্যায়ামের পর প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত।
এছাড়া, কোনো কাজ করার আগে যদি আপনার তক্ষৎনাৎ শক্তি প্রয়োজন হয় তাহলে সাধারণ বা simple carbohydrate বা শর্করা খেতে হবে। আর দীর্ঘসময় ধরে কোনো কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করলে complex বা জটিল শর্করা খেতে হবে।
দিনে কতক্ষণ পরিশ্রম জরুরি?(How much should I exercise a day)
যদি কঠোর ব্যায়াম করা হয় তাহলে সপ্তাহে ২.৫ ঘন্টা করা উচিত। এবং ব্যায়ামটা যদি সাধারণ হয় তাহলে ২.৫ ঘন্টা থেকে আরেকটু বেশি করতে হবে সপ্তাহে।
0 Comments